হজ্জ পালনের নিয়মাবলীঃ
হজ্জের ফরয তিনটিঃ
১. ইহরাম বাঁধা।
২. আরাফাহ ময়দানে অবস্থান করা।
৩. তাওয়াফে যিয়ারাহ করা।
হজ্জের ওয়াজিব ছয়টিঃ
১. মুযদালিফায় অবস্থান করা।
২. জামারায় কংকর নিক্ষেপ করা
৩. কুরবানী করা।
৪. মাথা মুন্ডানো/কামানো।
৫. সাফা মারওয়াহ সায়ী করা।
৬. বিদায়ী তাওয়াফ করা।
হজ্জ আল্লাহ প্রেম ও বিশ্ব মুসলিমের ভ্রাতৃত্ববন্ধনের অন্যতম পথ। হজ্জ বিশ্ব মুসলিমের সামাজিক, রাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক ঐক্যের এক অত্যুজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি আল্লাহর নির্দেশিত এমন একটা ফরয বিধান, যা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পঞ্চম স্তম্ভ এবং ইসলামের অপরাপর বিধান থেকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। হজ্জে আর্থিক ও কায়িক শ্রমের সমন্বয় রয়েছে, যা অন্য কোন ইবাদতে একসঙ্গে পাওয়া যায় না।
হজ্জ সারা বিশ্বের সহীহ মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও সাম্যের প্রতীক। যার ওপর হজ্জ ফরয তাকে অবশ্যই হজ্জ আদায় করতে হবে। ৮ যিলহজ্জ থেকে ১২ যিলহজ্জ পর্যন্ত এই ৫ দিনে মক্কা মুকাররমা ও তার আশে পাশের কয়েকটি জায়গায় (মক্কায় তাওয়াফ, সাফা-মারওয়ায় সায়ী, মিনার তাঁবুর জীবন, আরাফাতের বিশাল প্রান্তরে অবস্থান, মুজদালিফায় রাত্রি যাপন আবার মিনাতে প্রত্যাবর্তন, জামরাগুলোতে কংকর নিক্ষেপ, মিনাতে পশু কুরবানী, আবার ক্বাবা তাওয়াফ, সাফা-মারওয়ায় সায়ী ইত্যাদি) কিছু কর্তব্য কার্য সম্পাদন করাকে ইসলামের পরিভাষায় হজ্জ বলা হয়।
‘হজ্জ’অর্থ কছদ, সংকল্প। হজ্জের আভিধানিক অর্থ হলো যিয়ারতের এরাদা করা। শরীয়তের পরিভাষায় হজ্জের অর্থ কতক কার্যক্রম সম্পাদন করার উদ্দেশ্যে ইহরামের সাথে বায়তুল্লাহ যিয়ারতের সংকল্প। অর্থাৎ আল্লাহকে রাজি খুশী করার উদ্দেশ্যে শরীয়তের বিধান অনুসারে হজ্জের ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরীফসহ নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানসমূহে, নির্দিষ্ট কর্মসমূহ সুনির্দিষ্ট পন্থায় সম্পাদন (যিয়ারত) করাকে ইসলামের পরিভাষায় হজ্জ বলা হয়।
এক নজরে হজ্জ ও তার আমলসমূহ
হজ্জের ১ম দিন ৮ই যিলহজ্জ
ইহরাম অবস্থায় (ফরয) মক্কা থেকে মিনায় রওনা হবে।
মিনায় যোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজরের নামায পড়বে। (সুন্নত)
মিনায় রাত্রি যাপন করবে। ( সুন্নত), (অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রাত্রে আরাফাতের ময়দানে রওনা হতে পারে)।
হজ্জের ২য় দিন ৯ই যিলহজ্জ
ফজরের নামাজ মিনায় পড়ে আরাফাতের ময়দানে রওনা হবে। (সুন্নত), এই দিন থেকে তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব।
আরাফাতে সূর্য হেলার পর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। (ফরয)
ওয়াক্ত মত যোহরের নামাজ আরাফাতে পড়বে।
ওয়াক্ত মত আছরের নামাজ আরাফাতে পড়বে।
সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ আদায় না করে মুজদালিফায় রওনা হবে।
মুজদালিফায় এশার ওয়াক্তে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করা ওয়াজিব এবং ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর মত অনুসারে এক আযান ও এক ইকামতে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবে।
মুজদালিফায় অবস্থান ওয়াজিব এবং রাত্রি যাপন সুন্নত। (মুজদালিফা থেকে এই রাত্রে ছোট ছোট ৭০টি কংকর সংগ্রহ করতে হবে)।
হজ্জের ৩য় দিন ১০ই যিলহজ্জ
মুজদালিফায় সুবেহ সাদিক থেকে সূর্য উদয়ের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কিছুক্ষণ অবস্থান করা ওয়াজিব।
মিনায় পৌঁছে জামারায় বড় শয়তানকে ৭টি কংকর মারবে। (ওয়াজিব)
তারপর কুরবানী করবে। (ওয়াজিব)
তারপর মাথা কামানো বা চুল ছাঁটানো। (ওয়াজিব)
তারপর তাওয়াফে যিয়ারাহ করার জন্য মক্কায় যাবে। (ফরয)
মিনায় অবস্থান করা। (সুন্নত)
হজ্জের ৪র্থ দিন ১১ই যিলহজ্জ
চুল কামানো বা ছাঁটানো ও তাওয়াফে যিয়ারাহ (ফরয) না করে থাকলে আজ করবে।
মিনায় শয়তান সমূহের স্তম্ভকে ৭টি করে মোট ২১টি কংকর মারবে। (ওয়াজিব)
প্রথমে সূর্য হেলার পর ছোট শয়তানকে ৭টি কংকর মারবে (ওয়াজিব), তারপর কিবলা মুখি হয়ে দো’আ করবে।
তারপর মেঝ শয়তানকে ৭টি কংকর মারবে (ওয়াজিব), তারপর কিবলা মুখি হয়ে দো’আ করবে।
তারপর বড় শয়তানকে ৭টি কংকর মারবে (ওয়াজিব), এখানে দো’আ করতে হবে না।
মিনায় অবস্থান করা। (সুন্নত)
হজ্জের ৫ম দিন ১২ই যিলহজ্জ
কুরবানি, তাওয়াফে যিয়ারাহ (ফরয) না করে থাকলে আজ সূর্যাস্তের পূর্বে অবশ্যই করবে।
মিনায় শয়তান সমূহের স্তম্ভকে ৭টি করে মোট ২১টি কংকর মারবে। (ওয়াজিব)
প্রথমে সূর্য হেলার পর ছোট শয়তানকে ৭টি কংকর মারবে (ওয়াজিব), তারপর কিবলা মুখি হয়ে দো’আ করবে।
তারপর মেঝ শয়তানকে ৭টি কংকর মারবে (ওয়াজিব), তারপর কিবলা মুখি হয়ে দো’আ করবে।
তারপর বড় শয়তানকে ৭টি কংকর মারবে (ওয়াজিব), এখানে দো’আ করতে হবে না।
সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করতে হবে। (জায়েজ)
তবে ১৩ই যিলহজ্জ মিনায় শয়তান সমূহের স্তম্ভকে ৭টি করে মোট ২১টি কংকর মেরে মক্কায় আসা উচিৎ। (সুন্নত)
বিঃদ্রঃ ৯ই যিলহজ্জ বাদ ফজর থেকে ১৩ই যিলহজ্জ বাদ আছর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব।
‘ইহরাম’ কি ও কেন?
হজ আল্লাহ তাআলা কর্তৃক অকাট্য দলিলের ভিত্তিতে জারিকৃত ফরজ ইবাদত। হজ ও ওমরার ইবাদতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রথম রুকনই হলো ইহরাম। ইহরাম সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কোনো ধারণা নেই। অথচ হজ ও ওমরা পালনে ইহরাম বাঁধা হলো ফরজ। সংক্ষেপে ইহরাম কি? তার পরিচয় ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হলো-
ইহরাম কি? اَلْاِحْرَامُ (ইহরাম) শব্দটি حَرَامٌ (হারাম) শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো কোনো জিনিসকে নিজের ওপর হারাম বা নিষিদ্ধ করে নেয়া। আর এ ইহরামই হজ ও ওমরার প্রথম ফরজ কাজ। পুরুষদের জন্য সেলাইবিহীন দুই টুকরো সাদা কাপড় আর নারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় শালীন পোশাক পরিধান করাই হলো ইহরাম।
ইহরাম কেন? এ কারণেই হজ ও ওমরা পালনকারী ব্যক্তি ইহরামের মাধ্যমে নিজের ওপর স্ত্রী সহবাস, মাথার চুল, হাতের নখ, গোঁফ, বগল ও নাভির নিচের ক্ষৌর কর্যাদি, সুগন্ধি ব্যবহার, সেলাই করা পোশাক পরিধান এবং শিকার করাসহ কিছু বিষয়কে হারাম করে নেয়।
প্রকাশ থাকে যে-উল্লেখিত কাজগুলো পাশাপাশি ‘হজ ও ওমরা’ এ দুটির মধ্যে যেটি আদায় করার ইচ্ছা করবে; তার নিয়ত করে চার ভাগে উচ্চ স্বরে তিন বার তালবিয়া পাঠ করাকেই ইহরাম বলে।
ইহরামের প্রয়োজনীয়তাঃ নামাজের জন্য যেমন তাকবিরে তাহরিমা বাধা হয়। তেমনি হজের জন্য ইহরাম বাধা হয়। তাকবিরে তাহরিমার দ্বারা স্বাভাবিক অবস্থার হালাল ও বৈধ কাজগুলো নামাজি ব্যক্তির জন্য নামাজ আদায়ের সময় হারাম হয়ে যায়।
ঠিক ইহরামের মাধ্যমেই হজ ও ওমরা পালনকারী ব্যক্তির জন্যও স্বাভাবিক অবস্থার অনেক হালাল কাজও হারাম হয়ে যায়। এ কারণেই হজ ও ওমরার জন্য ইহরামে ফরজ করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ ও ওমরা পালনকারীকে সঠিকভাবে ইহরাম বাধার ও ইহরাম বাধার করণীয় সম্পর্কে জানার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইহরাম বাঁধবেন যেভাবে
ইহরাম হলো হজ ও ওমরার প্রথম রুকন। হজ এবং ওমরা সম্পাদনের জন্য প্রথমেই ইহরাম বেঁধে নিতে হয়। এ কারণেই ইহরামকে হজ ও এবং ওমরার জন্য ফরজ করা হয়েছে। হজ ও ওমরা সম্পাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রুকন ‘ইহরাম’ বাঁধার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো-
ইহরামের আগে
ইহরাম বাঁধার পূর্বেই গোঁফ, বগল ও নাভীর নিচের ক্ষৌর কার্যাদি সম্পন্ন করা, নখ কাটা, গোসল করে পাক সাফ হয়ে যাওয়া আবশ্যক। এমনকি ঋতুবর্তী মহিলাদেরও এ সময় গোসল করা মুস্তাহাব। সুগন্ধি ব্যবহার করাও মুস্তাহাব।
হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি নিজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইহরাম বাঁধার আগে তাঁকে সুগন্ধি মাখিয়ে দিতাম। (বুখারি, মসুলিম, হিদায়া) তবে ইহরাম বাঁধার পর সুগন্ধি ব্যবহার করা নিষেধ।
ইহরাম বাঁধবেন যেভাবে
>> প্রথমেই আত্মিক পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার জন্য গোসল করা। গোসল করা সম্ভব না হলে অজু করা। চুল কাটার প্রয়োজন না হলে চিরুনি দিয়ে চুলগুলো পরিপাটি করে নেয়া।
>> গোসলের পর সেলাইহিবীন দুটি কাপড় পরিধান করা। একটি হলো- লুঙ্গি (ইজার) হিসেবে এবং অন্যটি চাদর (লেফাফা) হিসেবে।
>> মীকাতের নির্ধারিত স্থানে অথবা মীকাতের নির্ধারিত স্থানের আগেই ইহরামের নিয়তে দু’রাকাআত নামাজ আদায় করা। নামাজের প্রথম রাকাআতে সুরা ফাতিহা পর সুরা কাফিরুন ও দ্বিতীয় রাকাআতে সুরা ইখলাস পড়া মুস্তাহাব। (নামাজের সময় মাথায় টুপি থাকবে, নামাজ শেষে নিয়তের আগেই টুপি খুলে ফেলা)
>> ইহরামের নিয়ত করা। যদি ওমরা জন্য ইহরাম হয় তাহলে বলবে- ‘লাব্বাইক ওমরাতান’ (لَبَّيْك عُمْرَةً) আর যদি ইহরাম হজের জন্য হয় তাহলে বলবে- ‘লাব্বাইক হাজ্জান’ (لَبَّيْك حَجً)
অতঃপর হজ বা ওমরা সহজে সম্পাদনের জন্য ইমাম কুদুরি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ দোয়াটি পড়তে বলেন-
(اَللَّهُمَّ اِنِّي اُرِيْدُ (العُمْرَةَ – الْحَجَّ) فَيَسِّرْهُ لِيْ وَ تَقَبَّلْهُ مِنِّي)
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুল উমরাতা/হাজ্জা ফাইয়াসসিরহু লি ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নি’
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি ওমরার/হজের ইচ্ছা করছি; আপনি আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন।’
>> ইহরামের নিয়তের পর পরই উচ্চস্বরে চার ভাগে (প্রত্যেক ভাগ এক নিঃশ্বাসে) তালবিয়া পাঠ করা (৩ বার)
>> لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ
>> لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ
>> اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ
>> لاَ شَرِيْكَ لَكَ
উচ্চারণ
>> ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক;
>> লাব্বাইক, লা-শারিকা-লাকা লাব্বাইক;
>> ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি’মাতা লাকা ওয়াল-মুলক;
>> লা শারিকা লাকা।’
মনে রাখতে হবে
উচ্চস্বরে চার ভাগে (প্রত্যেক ভাগ এক নিঃশ্বাসে) তিনবার তালবিয়া পাঠের মাধ্যমে ইহরাম বাঁধার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তখন থেকে ইহরামকারীর জন্য হজ ও ওমরার কার্যক্রম ছাড়া স্বাভাবিক সময়ের বৈধ কাজও হারাম হয়ে যায়।
পরিশেষে…
ইহরাম বাধার পর হজ বা ওমরা পালনেচ্ছুগণ বেশি বেশি তালবিয়া, দরূদ ও নিজেদের ইচ্ছা মতো দোয়া পাঠ করবে। ইহরাম বাধার পর এ দোয়া পাঠ করাও সুন্নাত-
(اَللَّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ النَّارِ)
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউ’জুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান্নারি’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসুন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিকভাবে ইহরাম বেধে যথাযথভাবে হজ ও ওমরা আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইহরাম অবস্থায় যে সব কাজ করা নিষেধ
হজের প্রথম রুকন ইহরাম। ইহরাম ছাড়া হজ কল্পনাই করা যায় না। ইহরামের মাধ্যমেই মানুষ হজ ও ওমরার কাজ শুরু করে। নামাজের তাকবিরে তাহরিমার মতো ইহরামের দ্বারাই স্বাভাবিক অবস্থার বৈধ কাজসহ অবৈধ সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
ইহরাম বাধার পর হজ ও ওমরাকারীর জন্য কিছু নিষিদ্ধ ও বর্জনীয় কাজ রয়েছে। ইহরামকারীদের জন্য নিষিদ্ধ ও বর্জনীয় কাজগুলো হজ ও ওমরা পালনকারীদের জন্য তুলে ধরা হলো-
ইহরামকারীর জন্য যা নিষিদ্ধ বা বর্জনীয়
হজ বা ওমরায় গমণকারী স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর যৌন সম্ভোগ ও এ সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা করা নিষেধ।
পুরুষের জন্য সেলাইযুক্ত কাপড় দুটি কাপড় এবং স্ত্রীলোকদের জন্য শালীন ও রুচিশীল স্বাচ্ছন্দ্য পোশাক পরিধান করা।
ইহরাম অবস্থায় মাথা ও মুখমণ্ডল আবৃত করা যাবে না। তবে স্ত্রীলোকগণ মাথা ঢাকতে পারেন তবে মুখ অনাবৃতই থাকবে।
ইহরামের পর সুগন্ধি ব্যবহার করা। কাপড় থেকে ইহরামের আগে ব্যবহৃত সুগন্ধির ঘ্রাণে কোনো সমস্যা নেই।
ইহরাম অবস্থায় চুল বা পশম কাটা বা উপড়ানো যাবে না।
নখ কাটা যাবে না; তবে ভাঙ্গা নখ ভেঙ্গে ফেলায় ক্ষতি নেই।
কোনো স্থলজ পশু শিকার করা। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! ইহরামরত অবস্থায় শিকার করো না। (সূরা মায়িদা : আয়াত ৯৫) এমনকি শিকারকে হাঁকানো বা অন্যকে শিকারের কাজে সহযোগিতা করা বা যবেহ করাও নিষেধ।
নিজের শরীর বা মাথা থেকে উকুন বা উকুন জাতীয় প্রাণী বধ করা যাবে না। তবে সাপ, মশা-মাছি, ডাশ, গিরগিটি, ইঁদুর, পাগলা কুকুর ইত্যাদি মারার বৈধতা রয়েছে।
মনে রাখতে হবেইহরাম হলো হজ ও ওমরার জন্য প্রথম শর্ত। যা ভঙ্গ হয়ে গেলে হজ ও ওমরা আদায় হবে না। হজ ও ওমরা পালনেচ্ছুদেরকে যথাযথভাবে হজ ও ওমরা আদায়ে ইহরামের নিষিদ্ধ ও বর্জনীয় বিষয়ের প্রতি যত্নবান হওয়া জরুরি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব হজ ও ওমরা পালনকারীদেরকে ইহরামের যাবতীয় বিষয়গুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।